ভিডিও

বিএনএফ’র সহায়তায় নিজেদের ঘুরে দাঁড়ানোর  স্বপ্ন দেখছেন পঞ্চগড়ের হতদরিদ্র নারীরা 

প্রকাশিত: মার্চ ০৮, ২০২৪, ০৩:৪২ দুপুর
আপডেট: মার্চ ০৮, ২০২৪, ১০:৫৭ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

সামসউদ্দীন চৌধুরী কালাম (পঞ্চগড়) থেকে ঃ পঞ্চগড় জেলা সদরের সীমান্তবর্তী চাকলাহাট ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম সর্দারপাড়া। নিজেদের কোন জমি না থাকায় পঞ্চগড়-চাকলাহাট আঞ্চলিক সড়কের পাশের সরকারি জমিতে (নয়নজলী) ঘর তুলে বসবাস করছেন ওই গ্রামের মাজেদা বেগম-গোলাম রব্বানী দম্পত্তি। সম্পদ বলতে স্বামীর একটি রিক্সা-ভ্যান। এলাকার ফড়িয়া গাছ ব্যবসায়ীদের কেনা গাছ কেটে স’মিলে এনে দেয়াই তার কাজ। এই আয় দিয়েই স্ত্রী ও চার ছেলেমেয়ের সংসার চলে টেনেটুনে। এরই মধ্যে দুই মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন।

অপর মেয়ে স্থানীয় স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। টাকার অভাবে একমাত্র ছেলে পড়ালেখা বাদ দিয়ে বাড়িতে বসে থাকে। মাঝে মধ্যে বাবার সাথে কাজে যায়। স্ত্রী মাজেদা বেগমের ইচ্ছে নিজে কিছু করে সংসারে কিছুটা সহায়তা করা। কিন্ত সব কিছুতে লাগে পুঁজি। তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে চাকলাহাট ইউনিয়ন সমাজকল্যাণ ফেডারেশন। বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন-বিএনএফ’র হত দরিদ্র মহিলাদের ছাগল পালনের মাধ্যমে আত্মসামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০২০-২১ অর্থ বছরের বরাদ্দ থেকে ২৪ জনের মত মাজেদা বেগমকেও দেয়া হয় দুইটি বকনা ছাগল।

ছাগল দেয়ার এক বছরের মধ্যে দু’টি ছাগলই দু’টি করে বাচ্চা দেয়। এরই মধ্যে ৬টি ছাগল বিক্রয় করেন ১৮ হাজার টাকায়। ওই টাকার সাথে ১০ হাজার টাকা যোগ করে এক বছর আগে ২৮ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেন। এরই মধ্যে ওই গরুর একটি বাছুর হয়েছে। ছয় মাস দুধ নেয়ার পর গাভিটি আবারো গর্ভবতী হয়েছে। বর্তমানে গাভিটির বাছুরসহ বাজারমূল্য লাখ টাকার ওপরে। মাজেদা জানান, আরও কয়েকটি ছাগল আছে। বাড়িতে হাঁস-মুরগিও পালছি।

সব সময় নিজের কাছে কিছু টাকাও থাকে। পরিবারের প্রয়োজনে নিজেও শরীক হতে পারি। পরিকল্পনা আছে কয়েকটি ছাগল বিক্রি করে আরও একটি গাভি কিনব। তিনি স্বপ্ন দেখেন আমরা এখন ৫ শতক জমি কিনে সেখানে ঘর বানিয়ে বসবাস করব।
এ নিয়ে কথা হয় চাকলাহাট ইউনিয়ন সমাজকল্যাণ ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সহিরুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, আরডিআরএস বাংলাদেশ’র সহায়তায় আমাদের ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৯২ সালে। সমাজসেবার নিবন্ধনপ্রাপ্ত হই ২০০৪ সালে। শুরু থেকেই আমরা সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠিকে নিয়ে কাজ করছি। আমরা বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় হতদরিদ্র মহিলাদের কর্মসংস্থানে কাজ করে যাচ্ছি।

এরই অংশ হিসেবে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৫ জন ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৪ জন মহিলাকে বিনামূল্যে দু’টি করে ছাগল দিয়েছি। এর আগে বোদা উপজেলা বড়শশি ইউনিয়নের বিলুপ্ত বোদেশ্বরী ছিটমহলের ৬০ জন হত দরিদ্র মহিলাকে একটি করে ছাগল দেয়া হয়েছিল। এই ছাগল পালন করে অনেকেই এখন স্বাবলম্বি। বিএনএফ’র বিশেষ বরাদ্দে গত অর্থবছরে দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটী ইউনিয়নের কাজলদিঘী বিলুপ্ত ছিটমহলে ১৪টি পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে একটি করে বকনা গরু প্রদান করা হয়েছে। গবাদিপশু প্রদানের এক বছর পর্যন্ত আমরা চিকিৎসা সেবাসহ নিয়মিত মনিটরিং করে আসছি।

এছাড়া সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের বিলুপ্ত গারাতি ছিটমহলের হালুয়া পাড়া ও ডাবরভাঙ্গা গ্রামের ২০ জন হতদরিদ্র নারীকে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিনামূল্যে সেলাই মেশিন প্রদান করেছি। এরা অধিকাংশই এখন নিজের বাড়িতে কাপড় সেলাই করে সংসারে সচ্ছলতা এনেছে।  



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS